রেল স্টেশনের রূপকথার নাম জ্যোতি

নিজস্ব সংবাদদাতা পটনা: জ্যোতির আধার কার্ড বা পরিচয়পত্রে কী ঠিকানা রয়েছে বা আদৌ রয়েছে কিনা সেটা জানার কৌতূহল হচ্ছিল। এখন অবশ্য জ্যোতি একটা ভাড়া বাড়িতে থাকে।
জ্যোতির জন্ম কোথায় জানা নেই। এমনকি জন্মদাত্রী বাবা মায়ের ও কোনও হদিশ নেই। চোখ খোলার পর ওই কন্যাসন্তান কে পাটনা রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে দেখা গেছিল। ওই স্টেশনের এক ভিক্ষুক দম্পতির নজরে আসতেই তারা ওকে নিজেদের কাছে রেখে দেন। নামকরণ ও বোধহয় তাদের ই করা। তারপর আর কী! ওদের সঙ্গে ভিক্ষা করতে করতে ই জ্যোতির বয়সন্ধি পর্যন্ত কেটে যায়।
জ্যোতি এখন উনিশ বছরের তরুণী, পাটনা শহরে এখন মোটামুটি পরিচিত মুখ। এবার শুনুন, কোনও দিন খাওয়া জুটতো, কোনোদিন বলাবাহুল্য খালি পেটে, এভাবেই চলছিল। তবে কিছু জানার কিছু শেখার ইচ্ছেটাকে অভুক্ত পেট দমিয়ে রাখতে পারেনি। আর যে স্বপ্ন উড়ানে উড়তেই চায় তাকে রোখে কার সাধ্য। পাটনা জেলা প্রশাসনের সাহায্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জ্যোতির পড়াশোনার ব্যবস্থা করে, আর তার মধ্যেই জ্যোতি কে বড়ো করা ওই দত্তক মায়ের মৃত্যুতে সব যেন ওলটপালট হতে যায়। দমেনি জ্যোতি, মাধ্যমিক পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর অনেক কেই অবাক করে দিয়েছিল।
তবে এখন জ্যোতির ঠিকানা আর পাটনা স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম না, একটা ভাড়া বাড়ির ব্যবস্থা করেছে জ্যোতি। আর যে অনন্যা স্বপ্নপূরণের জন্য নিরলস চেষ্টা করছে , সে তো বসে থাকার নয় ! পাটনা স্টেশনের কাছেই একটা ক্যাফেটেরিয়া চালায় জ্যোতি। হ্যাঁ, ঠিক ই শুনছেন ! মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনার চেষ্টা চলছে, সঙ্গে চলছে মধুবনী চিত্রকলা শেখা। জ্যোতির পদবী না হয় নাই জানলেন, দূর থেকেই কুর্নিশ করুন ওকে !

0
0

Leave a Comment